স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় চমৎকার একটি বাইক চোখে পড়ল, সুজুকি ব্র্যান্ডের। কিন্তু নাম্বার প্লেট বিহীন ও চালকের হেলমেট নেই! থামতে বলবো, তার আগেই প্রচন্ড গতিতে ছুটে চলে গেল সামনের দিকে । বিপজ্জনকভাবে একে একে অন্যান্য গাড়িকে ওভারটেক করে যাচ্ছে অল্প বয়সী চালক। কেন যেন মনে হচ্ছিল চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই! পিছু নিলাম, কিন্তু জ্যামের এই শহরে বাইকের পিছু ধাওয়া করে খুব একটা সুবিধা করতে পারলাম না । চোখের পলকে বাইক উধাও!
যাই হোক, বাইক ধরার আশা ছেড়ে দিয়ে অফিসের পথ ধরলাম । মুখার্জি ঘাঠলার কাছে ডানে মোড় নিতেই সেই বাইক! গাড়ি থামিয়ে ধরে ফেললাম বাইকসহ চালককে!
যা ভেবেছিলাম তাই, অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, বাইকও তার নিজের নয়! বন্ধুর বাবার বাইক! এবার বন্ধুর পালা, তারও নেই লাইসেন্স! সবচেয়ে ভয়াবহ খবর হচ্ছে বাইকের সাথে কোন কাগজই নেই। রেজিস্ট্রেশন, ইন্সিওরেন্স, ফিটনেস,ট্যাক্স কিছুই নেই! বাসাতেও নেই। অর্থাৎ ঐ মুহূর্তে বাইকটি আসলেই কার এটা নির্ণয় করাই ছিল দুঃসাধ্য । চোরাই বাইকও হতে পারে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানালো, কিছুদিন পূর্বে বাইক কিনেছে আর রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা জমা দিয়েছে মাত্র । আরো জানালো এভাবে কাগজপত্র ব্যতীত বাইক চালানো অন্যায়, এটা জেনেও সে এই দুঃসাহসিক ও বিপজ্জনক কাজটি করছিল!
গুরুতর সব অপরাধের জন্য কাগজপত্র বিহীন বাইকটি আটক করা হয় (পরবর্তীতে যথাযথ কাগজপত্র প্রদর্শন করলে জরিমানা করে গাড়ি প্রকৃত মাদিককে হস্তান্তর করা হবে)। এছাড়া নিম্নোক্ত অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট অংকের জরিমানা আদায় করা হবে বাইকটি প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেওয়ার সময়:
1. হেলমেট ব্যতীত গাড়ি চালানোর জন্য – 500/=
2. ইন্সিওরেন্স বিহীন গাড়ি চালানোর জন্য – 2000/=
3. লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালানোর জন্য – 500/=
4. বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালানোর জন্য – 500/=
5. অপ্রাপ্তবয়স্ক চালককে গাড়ি দেওয়ার জন্য – 500/=
এখানেই শেষ নয় ঘটনা!
ঐ অপ্রাপ্তবয়স্ক চালককে কাগজপত্র বিহীন বাইকটি চালানোর জন্য গ্রেফতার করার সুযোগ ছিল। কিন্তু একাদশ শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষা চলায় তাকে গ্রেফতার না করে প্রথম বারের মতো অব্যাহত দেয়া হয় ।