-
- Feature, আন্তর্জাতিক, ইসলামিক, জাতীয়
- সন্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে পিতা-মাতার ভূমিকা অপরিসীম।
- আপডেট: May, 20, 2019, 2:57 pm
- 792 View
সন্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে পিতা-মাতার ভূমিকা অপরিসীম।
রিয়াদ মজুমদারঃ আমাদের প্রচলিত বোধ মনে করে, “মা-বাবা যাকরেন, সন্তানের মঙ্গলেরজন্যেই করেন”। অনেক ক্ষেত্রে এই প্রবাদটি কথার ঝুলি হিসেবেই রয়ে যায়! অনেক বাবা-মা সন্তানদের উপর তাঁদের ব্যক্তিগত স্বপ্ন চাপিয়ে দেন। অনেক সময় সন্তানকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের লক্ষ্য নির্ধারণে বাধা দেন! সব বাবা-মা’ই স্বপ্ন দেখেন সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হোক; কিন্ত কয়জন বাবা-মা চিন্তা করেন সন্তান প্রথমত একজন মানুষ হোক? হয়তো হাতেগোনা কয়েকজন পাওয়া যাবে! আমাদের মনে রাখতে হবে যে, পড়ালেখার ক্ষেত্রে সন্তানের আগ্রহ বেছে নেওয়ার জন্য পিতামাতার উৎসাহ একাডেমিক বৃদ্ধিকে বাড়িয়ে তুলবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কোন কোন বিষয়ে সন্তানের শেখার আনন্দ সেটা পিতামাতাকেই আবিষ্কার করতে হবে।
জীবনে সাফল্যের চাবিকাঠি শুধুমাত্র ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়! যে বাচ্চাটি প্রতিনিয়ত বাংলায় অথবা ইংরেজিতে ভাল করছে পিতামাতা তাকে দিয়েজীববিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত,পদার্থবিদ্যা, আইসিটি’তে বড় করতে চান! পিতামাতা সন্তানকে বোঝাতে চান যে, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত,পদার্থবিদ্যা, আইসিটি’তেই জীবনের একমাত্র সাফল্যের চাবিকাঠি! পিতামাতার আগ্রহ অনেক সময় সন্তানের জন্য বিরক্তিকর বা হতাশাজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, এ ক্ষেত্রে পড়া বা শেখার ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। সন্তানের নিজস্ব আগ্রহের বিষয় নিয়ে পড়াশুনা শুধুমাত্র জ্ঞানভাণ্ডার বিকাশে সহায়তা করে না, রীতিমত তাদের মস্তিষ্ক ঐ সকল বিষয়ের নিয়ামকগুলোর সাথে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরু করে দেয় ছোট বেলা থেকেই!
দানিং বাবা-মা’রা এ প্লাস পাওয়াকে সন্তানের লক্ষ্যনির্ধারণ করে দেন, সন্তানদেরপ্রতি এমন অমানবিক ভুলসিদ্ধান্ত আদর্শ পিতামাতারগ্রহন করা উচিত নয়। ব্রিটেনেরবিখ্যাত টিভি জার্নালিস্ট জনস্নো স্কুলে কখনই ভাল ছাত্রছিলেন না, ব্রিটেনেরমিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী দেবোরাসোনিয়া মেইডেন একদা ফুলবিক্রি করতেন, অ্যামেরিকানবিখ্যাত ‘জুরাসিক পার্ক’ফিল্মমেকার স্তিভেন এলানক্যালিফোর্নিয়া স্কুল অবথিয়েটার থেকে তিনবার বাদপড়েছিলেন, বিল গেটস এবংমার্ক জুকারবারগের কথা তোবাদই দিলাম! সুতারাং সন্তানের শেখার অনুভূতিগুলি যাচাই করতে ভুলবেন না।
পড়ালেখার পাশাপাশি উপন্যাস, সংবাদপত্র, পত্রিকা ইত্যাদি দিয়ে সন্তানের জন্য শেখার একটি বায়ুমণ্ডল তৈরি করুন। আপনাদের নিজস্ব স্বপ্নগুলো সন্তানদের অনুসরণ করতে বাধ্য করবেন না। এক একটি ছাত্র নিজস্ব পছন্দসই যে কোনও বিষয়ে স্নাতক করতে পারে, মাতাপিতা হিসেবে সন্তানের স্ব-বুদ্ধি বিকাশের জন্য সাহায্য করুন এবং ওদের খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবেন না, কারণ সেই ক্ষেত্রে বাচ্চাদের মনে বাবা-মা থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রবণতা বিকাশ করে, ফলে তারা এমন কাজ শুরু করে যে কাজ বাবা-মা তাদের করার অনুমতি দেয় না! তখন বাচ্চাদের শেখার প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পরিশেষে বাবা-মা’দের প্রতি আবেদন থাকবে; আপনি যদি সত্যিই আপনার সন্তানকে ভাল শিক্ষার্থী হতে সাহায্য করতে চান, তাহলে তাকে মুগ্ধ করে এমন বিষয় এবং বিষয়গুলি অন্বেষণ করতে উৎসাহিতকরুন। প্রতিটি সন্তানের পড়ালেখার পছন্দের বিষয় তাদের শেখার সর্বোত্তম উপায় মনে করবেন।
আরো পড়ুন: