র্যাবের কাছে আমি আজীবন কৃতজ্ঞ আল্লাহ তাদের হেফাজত করুন- উদ্ধারকৃত কিশোরের পিতা
মাহফুজ বাবু;;
গত ৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা শাকতালার বাড়ি থেকে ঘুরতে বেড়িয়ে কুমিল্লা রেল স্টেশনে আসে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ”শরিফ” (১৩)। সেখান থেকেই অপহরন করে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরটি কে । প্রথমে প্রলোভন এরপর সেভেনআপের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর ও শাহারাস্তি এলাকায়। কখনো বোডিং বা আবাসিক হোটেলে আবার কখনো বা পরিত্যাক্ত বাড়িতে আটকে রাখা হয় তাকে। এসময় কিশোর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ”শরিফ” বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে একাধিক বার পাশবিক নির্যাতন ও বলাৎকার করে মানুষরূপী নরপশু ইমাম হোসেন বাবুল। শুধু তাই নয় , গত ১০ তারিখে শিশুটির পিতার কাছে ফোন দিয়ে একলক্ষ টাকা দাবী করে অপহরণকারী। দাবীকৃত টাকা ঠিক সময়ে পৌছে না দিলে শরিফ কে খুন করে পুতে ফেলার হুমকি দেয় তার পিতাকে। নিরুপায় পিতা থানা পুলিশ হাসপাতালে ঘুরছিলো সেসময় ছেলের খোঁজে। অপহরণ কারীর ফোন পেয়ে আরো ভেঙ্গে পরে সে। স্বজনদের কথামত কুমিল্লা র্যাব ১১ সিপিসি কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে সাথে সাথেই অভিযানে নামে সিপিসি ২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমারের নেতৃত্বে র্যাবের বিশেষ টিম। র্যাবের পরামর্শে অপহরণকারীর কাছে বিকাশ নাম্বার চায় ভুক্তভোগী পিতা। এরপর অপহরণকারীর দেয়া বিকাশ নাম্বারের সুত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ১৫ দিন পর গতকাল রাতে চাঁদপুর মাছ ঘাট এলাকা থেকে আটক করে মানুষরুপি এই নরপশুকে। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় ভিকটিম ‘শরিফ‘ কে। গতরাতে র্যাব অফিসে এসে ছেলেকে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পরেন পিতা। বারবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানায় র্যাব কর্মকর্তাদের। ভুক্তভোগী পিতা জানায়, “ছেলের আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলাম, কত জায়গায় ঘুরেছি খুঁজে পাইনি র্যাব সদস্যদের আন্তরিক চেষ্টা আর তাদের সহযোগিতার কথা মনে রাখবো আজীবন । আল্লাহ তাদের ভালো ভালো রাখুক হেফাজত করুক দোয়া করি ”কুমিল্লা র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার প্রণব কুমার বলেন, অভিযোগটি পেয়ে সাথে ঘটনার তদন্তে নামে র্যাব। আসামী বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছিলো। টাকা দাবী করলেও কোন ঠিকানা দিচ্ছিলো না। অবশেষে ভিকটিমের পিতার সাথে পরামর্শ করে বিকাশ নাম্বার চাইতে বলি। কাজ হয় এতে, অপহরণকারী দুটো বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠাতে বলে। সেই বিকাশ নাম্বারের সুত্র ধরেই তাকে আটক করতে সক্ষম হই গতকাল শনিবার রাতে।
চাঁদপুর মিডিয়া সেন্টার” নামক একটি বিকাশের দোকানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি। এরপরই কুমিল্লা রেলষ্টেশন থেকে শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবীকারী ইমাম হোসেন বাবুল (৪৮) কে গ্রেপ্তার করি। আটক আসামী চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার মেহার গ্রামের শফিউল্লাহ মিয়াজীর ছেলে।
ইমাম হোসেন বাবুল (৪৮) কে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, সে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার স্থায়ী বাসিন্দা। সে দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লাসহ সে দীর্ঘদিন যাবৎ কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার-পরিজনদের নিকট থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে আসছিল। উক্ত কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব সদস্যদের গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবশেষে অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালি থানায় আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।