উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানের পর এবার আলোচনায় পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক গাজী মোজাম্মেল হক। যিনি আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটির সভাপতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, জাহের আলী নামে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক অংশীদারকে জোর করে আটকে রেখে দখলে নিয়েছেন প্রায় ৬২ বিঘা জমি। শুধু তাই নয়, ওই ব্যবসায়ীর নামে দিয়েছেন একের পর এক মামলা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া যাবে আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি নামের এই আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। যাতে রয়েছে লোভনীয় নানা অফার।
প্রকল্পের সভাপতি হলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক। যদিও পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, এমন নামে পুলিশের কোন আবাসন প্রকল্পই নেই।
২০০১ সাল থেকে এই আবাসনের জমি কেনার কাজ করতেন, নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা জাহের আলী। হঠাৎ করেই তার কাছ থেকে ৩৩ কোটি টাকা পাওনা দাবি করেন গাজী মোজাম্মেল। সেই থেকে ঘটনার শুরু।
গত বছরের (২০১৮ সাল) জুলাই মাসে আনন্দ পুলিশ হাউজিংয়ের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলা করা হয় জাহের আলী এবং তার ছেলে ও মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে। মামলা হস্তান্তর হয় গোয়েন্দা পুলিশে। বিধি মোতাবেক তাদের রিমান্ডে নেয়া হয় ২৫ জুলাই। সেখানেই জন্ম দেন চাঞ্চল্যকর এক ঘটনার।
রিমান্ডে থাকা অবস্থায়ই ৬২ বিঘা জমি ও ৩টি দামি গাড়ি গাজী মোজাম্মেল ও তার স্ত্রীর নামে লিখে দেন জাহের আলী।
ডিবি পুলিশের নথি থেকে জানা যায়, ২৯ জুলাই রিমান্ড শেষে আবারো আদালতে প্রেরণ করা হয় তাদের। যদিও জুলাইয়ের ১০ তারিখ থেকেই গুম করে রাখার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ভুক্তভোগী জাহের আলি বলনে, ‘পা ধরছি আম্নের। আম্নে কি কইতেছেন। স্যার আমার চোখটা খুইল্লা দেন। পা টা খুইল্লা দেন। সে (অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল) কয়, ইলিয়াসের লাশ পাইছে না। তুগোর লাশ পাইতনা কিন্তু’।
আরেক ভুক্তভোগী মতিন বলেন, ‘এলাকার কিছু নিরীহ মানুষ আছে, ৫ হাজার ১০ হাজার টাকা দিয়া তাদেরও বাদি বানাইছে। এইভাবে আমাদের খালি মামলার উপর মামলা দিয়া হয়রানি করাইছে’।
এ নিয়ে রুপগঞ্জ ও শাহবাগ থানা থেকে সহযোগিতা না পেয়ে আদালতে মামলা করেন জাহের আলীর পুত্রবধু। পরে জামিন পান তারা। বিষয়টি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী হাসনা খাতুন বলেন, ‘২৫ তারিখ পর্যন্ত যদি রিমান্ডে থাকে থাহলে ২৬ তারিখ কিভাবে জমি দলিল হয়। এটা নিশ্চয় জোর করা ছাড়া সম্ভব না।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে নিজের হাউজিংয়ে পুলিশ শব্দ ব্যবহারের বিষয়টি ভুলে হতে পারে বলে জানান গাজী মোজাম্মেল।
কিন্তু ডিবি অফিসে আটকে রাখা এবং জোর করে জমি লিখে নেয়ার অভিযোগ সত্য নয় দাবি করেন পুলিশের এই অতিরিক্ত ডিআইজি।
বিষয়টি নজরে এসেছে পুলিশ সদর দপ্তরেরও।
আরো পড়ুন: