মাযহাব মানার অর্থ
আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে বাদ দিয়ে কোনো ইমামের এত্তেবা করার নাম মাযহাব বা তাকলীদ নয়। ইমামের ব্যাখ্যা কোরআন-হাদীসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হলেও তা মানতে হবে, এমন কথা কেউ বলে না। সুতরাং যারা বলে মাযহাব মানার অর্থ ‘আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করা’ এটা মিথ্যা অপবাদ আর প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
মাযহাব মানার অর্থ হলো, যে সমস্ত মাসআলার ক্ষেত্রে কোরআন-হাদীসের দলিল অকাট্ট বা সুস্পষ্ট নয়, কিংবা দলিলগুলো পরস্পর বিরোধী বলে অনুমিত হয়, অথবা কোনো বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে উম্মতের আলেমগণের মাঝে একাধিক মত চলে আসছে, এমন ক্ষেত্রে একজন সাধারণ মানুষ নিজে নিজে অধিক সহীহ ও উত্তম মত নির্ণয় করতে অক্ষম হওয়ার কারণে বরেণ্য কোনো ইমামের বিশ্লেষণের উপর আস্থা রেখে তাঁর সিদ্ধান্তের উপর আমল করবে। এর নামই মাযহাব মানা বা তাকলীদ করা।
সুতরাং তাকলীদ মানে হলো শরীয়তের বিশেষ শ্রেণীর (ইজতেহাদী/ ইখতেলাফী) মাসআলার ক্ষেত্রে কোনো স্বীকৃত ইমামের ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করা।
শরীয়তের বিশেষ শ্রেণীর মাসআলার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কেন একজন আলেমের তাকলীদ করে এবং কেন তারা নিজেরা দলিল বিশ্লেষণ করে সরাসরি কোরআন-হাদীসের উপর আমল করতে পারে না, তাও বুঝার বিষয়।
আর মনে রাখবেন, অনেক মাসআলা রয়েছে যেসব ক্ষেত্রে সাহাবাগণের মাঝে মতবিরোধ ছিল, আর তা নবীজীর পরবর্তী যুগ, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ ও রাসূল সুসংবাদ দিয়ে গেছেন, তার প্রায় ১৪০০ বছর পর স্বল্প ইলমের অধিকারী আমরা এসব বিষয় টেনে উম্মতকে বিভক্ত করা তো কোনো প্রকারেই উচিত নয়।
স্বর্ণযুগে যেসব মাসআলার একটা সমাধান হয়ে গেছে, তা ঐ পর্যায়ে রেখে নতুন নতুন হাজারো মাসআলা উদ্ভাবন করাই দরকার।
বাতিল শক্তি ঠিকই সফল, কেননা তারা আমাদের নিজেদের ভিতরে বিবাদ ঢুকিয়ে দিয়ে মুসলমানদের নিধন করে চলছে। সে বিষয়ে আমাদের কোনো চিন্তা আছে কি?
নবীজী সা: বলেন-
من لم يهتم بامر المسلمين فليس بمسلم
যে ব্যক্তি মুসলমানদের বিষয়ে গুরুত্ব দেয় না, সে মুসলিম নয়।
মুসলিম বিশ্বের অহংকার এরদোগান বলেন, – “মুসলমানে মুসলমানে মারামারি করুক , এটা আমি চাই না”।
আমরা কি এরকম হতে পারি না?