বুড়িচংয়ে ১৩কি.মি. গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন! ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।
সোমবার দুপুরে কুমিল্লা সদর উপজেলার আমতলী মাস্টার সিএনজি ফিলিং স্টেশন এর সামনে থেকে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউ পি সহ বিভিন্ন এলাকার ১৩ কিলোমিটার গ্যাস সংযোগ অবৈধ দাবি করে তা বিচ্ছিন্ন করে বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ। তবে সংযোগটি বৈধ দাবি স্থানীয় ষোলনল ইউনিয়ন এলাকার ৫ শতাধিত গ্রাহকের। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গ্যাস বিলের বই প্রদর্শন করে বলেন ৩বছর যাবৎ নিয়মিত গ্যাস বিল দিচ্ছেন তারা। বুড়িচং উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (এসিল্যান্ড) তাহমিনা খানমের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয় বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ। বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষের দাবী দীর্ঘদিন ধরেই সংযোগটি অবৈধ ভাবে ব্যাবহার করছে প্রায় ৩সহস্রাধিক পরিবার। এবিষয়ে তারা আরো বলেন, ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের আমতলি এলাকার ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস সংযোগের পাইপ থেকে অবৈধ ও অনিরাপদ ভাবে নিম্মমানের পাইপ দিয়ে সংযোগটি নেয়া হয়েছে বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। কে বা কারা এ সংযোগটি দিয়েছে সে বিষয়ে তারা কিছু জানেন না বলে জানান। তবে এর আগে বিভিন্ন সময় সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করতে এলে এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের বাঁধা ও আপত্তির কারনে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ। মাহে রমাযানকে সামনে রেখে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান ছাড়াই গ্যাস সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করায় হাজারো পরিবার উদ্দীগ্ন ও উৎকন্ঠা পরেছেন। বিশেষ করে বুড়িচংয়ের ষোলনল, শিমাইলখাড়া, বালিকাখাড়া, কামাড়খাড়া, পূর্বহাড়া, নানুয়ার বাজার, ভরাসার, খাড়াতাইয়া, ইছাপুরা, শিবরামপুর সহ বিভিন্ন এলাকার নারীরা ব্যাপক হতাশা ও বিপাকে পড়েছেন। এদিকে একাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহকের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় একটি চক্র খাড়াতাইয়া এলাকার হাবিবুর রহমান টুনু, আতাউর রহমান বাবু, আব্দুস সালাম আলফু, আবুল হাসেম সহ কয়েকজন গ্রাহকদের কাছ থেকে রাইজার প্রতি ৪৫-৫০ হাজার বা ততোধিক টাকা নিয়ে সংযোগ প্রদান। সংযোগ গ্রহনকারিদের বেশির ভাগই ব্যাংকে নিয়মিত গ্যাস বিল প্রদান করছেন। যারা বই পাননি এমন গ্রাহকদের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সংযোগ অবৈধ হলে আমাদের থেকে যে কোটি কোটি টাকা নেয়া হয়েছে তা ফেরত দেয়া হোক। আমাদের কষ্টার্জিত টাকা যারা লোপট করছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান তারা। অপরদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে বুড়িচং উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, সম্পুর্ণ অবৈধ ভাবে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেছে বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ। অবৈধ হলে বিগত কয়েকবছর ধরে কি করে ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করছেন গ্রাহকরা। বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিশন কোম্পানী লিমিটেড এর ডিজিএম আবুল বাশার এর সাথে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে এ বিষয়ে। সংযোগটি অবৈধ হলে রাইজার এবং বিল বই প্রদান করলেন কি করে। তাছাড়া সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু এলাকাবাসীর মাঝে গ্যাস সংযোগ প্রদান করবেন বলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বাখরাবাদের নিজস্ব ঠিকাদার এবং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে গ্রাহকরা রাইজারের টাকা প্রদান করে গ্যাস সংযোগ নেন। তিনি নিজেও একজন বৈধ গ্রাহক জানিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীকে নিয়ে এবিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক সহ বাখারাবাদ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলেও জানান। অনুসন্ধানে জানা যায় যায়, স্থানীয় একটি চক্র বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন সমঝোতার মাধ্যমে সংযোগটি দিয়েছেন। আর এর মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ২০ কোটি বা তারো অধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর যার একটি অংশ বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ ও পেয়েছেন বলে দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংযোগদাতাদের। যার কারনেই সংযোগটি বিগত কয়েক বছর ধরে চলছে। ভুক্তভোগীরা জানান, নোটিশ ছাড়া হঠাৎ আবাসিক এলাকার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় পবিত্র মাহে রমজান মাসে এতোগুলো গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন কোন সংযোগ না দিয়ে কিংবা আরো টাকা নিয়ে হলেও সংযোগটি দেয়ার দাবি জানান তারা।
আরো পড়ুন: