গোলাম রব্বানী শিপন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের মহাস্থান পূর্বপাড়া গ্রামে বাপের বাড়ী থেকে স্ত্রী ফিরে না আসায় ও পরিবারের মতবিরোধের কারণে মনের ক্ষোভে অভিমান করে (কীটনাশক জাতীয়) গ্যাসট্যাবলেট খেয়ে নুরনবী রহমান (২১) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মহাস্থান পূর্বপাড়া গ্রামের অফারুলের পুত্র নুরনবী রহমান, পেশায় মহাস্থান একজন লেবার শ্রমিক সংগঠনের সদস্য।
সে প্রায় ৩ বছর পূর্বে আত্মীয়র ভিতর বিয়ে করে বগুড়া সদর উপজেলার কালীবালা গ্রামে জেরিন আক্তার (২০)। তাদের বিয়ে প্রেম করেই হোক আর পারিবারিক সম্বন্ধের মাধ্যমেই হোক পান থেকে চুন খসলেই হলো।
পরিবারের সঙ্গে নুরনবীর স্ত্রীর বনিবনা খুব কম। একটু খানিক এদিক সেদিক হলেই ঝগড়া কাণ্ডে জড়িয়ে যায়। এ নিয়ে স্ত্রী জেরিন বেশ কয়েক বার রাগ করে তার বাবার বাড়ীতে চলে যায়। অপর একটি সূত্রে জানা যায়, নুরনবীর চাচা শ্বাশুড়ের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ধার নেয় নুরনবীর বাবা অফারুল। এই টাকা নিয়ে বিবাদের সৃষ্টি হয়। স্বামীর পরিবারে পারিবারিক কলহের জের ধরে একপর্যায়ে নুরনবীর স্ত্রী জেরিন তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকে নুরনবী ফোনের পর ফোন দিয়ে স্ত্রীকে আসার জন্য অনুরোধ জানায়। স্ত্রী জেরিন তাকে সাব জানিয়ে দেয় তোমার বাবা-মা সহ তোমাদের পরিবারের লোক জন এসে আমাকে নিয়ে যেতে হবে। নুরনবীর বউ আনার বিষয়টি তার বাবা মাকে বললে তারা মতবিরোধী করে। তখন থেকেই নুরনবীর চেহারার মধ্যে বিষণ্নতার কষ্ট–অভিমান ফুটে ওঠে। রবিবার স্ত্রী জেরিনের সাথে মোবাইলে শেষ কথা হয় নুরনবীর। তখন থেকেই নুরনবী গ্যাস ট্যাবলেট সঙ্গে নিয়ে ঘোরে। তার কাছে থাকা ৩টি গ্যাসট্যাবলেট কেড়েও নেয় তার সহকর্মীরা। পরে বাড়ীর আড়ালে গিয়ে মনের ক্ষোভে পুনরায় গ্যাসট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এতে বাড়ীর লোকজন তাকে দেখে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক পার্শ্ববর্তী টিএমএসএস হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফেরত দিলে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টায় তার মৃত্যু হয়। নিহত নুরনবীর জিসান (২) নামের একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
মিজানুর রহমানের সাথে কথা বলে তিনি জানান, গতকাল স্ত্রীকে নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে মহাস্থান গ্রামের নুরনবী রহমান অভিমান করে গ্যাস ট্যাবলেট খায়। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টায় তার মৃত্যু হয়। ওসি আরও জানান, যেহেতু এটি সদর থানার অধীনে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার ব্যবস্থা সদর থানা নেবে। তারপরেও এটি শিবগঞ্জ থানার ভিতরে হওয়ায় সোমবার দুপুরে আমাদের ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরুতহাল রিপোর্ট নিয়ে এসেছে। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে আইনানূক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।