১৪মে,গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলার পল্লীতে পরকিয়া কাণ্ডে মামীকে হত্যার পর ঘাতক প্রেমিক ভাগ্নে নিজেও আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের ভাগকোলা গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
নিহত মামী আলেয়া বেগম (৩৫) এবং আত্মহত্যাকারী ভাগ্নে আপেল মিয়ার (২০) পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত আলেয়া বেগম মোকামতলার পার্শ্ববর্তী ভাগকোলা গ্রামের সাইদুল ইসলামের ২য় স্ত্রী। সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভাগ্নে আপেল মিয়ার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের টেপাগাড়ি গ্রামে। সে মৃত আজাহার আলীর পুত্র। ছোটকালে তার মা, বাবা মারা যাওয়ার পর নানা, নানীর বাড়িতে প্রীতি পালন হয়। আপেল পেশায় কাঠ মিস্ত্রি কাজ করত। নানা ও তার মামা, মামী সবাই মিলে একই বাড়িতে বসবাস করত। একপর্যায়ে মামা সাইদুলের ২য় স্ত্রী আলেয়ার সাথে ভাগ্নে আপেলের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক সময় ভাগ্নের সাথে মামীর পরকিয়া প্রেমের ঘটনা ফাস হয়ে এলাকাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপর সমাজ পতিরা মামী ভাগ্নের অনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে পারিবারিক ভাবে দেনদরবার করে ভাগ্নেকে সেখান থেকে তার নিজ বাড়ি উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের টেপাগাড়ি গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এলাকাসীর কথা মতে আপেল তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। সেখান থেকে কিছুদিন পরপর আবারও নানার বাড়িতে যাওয়া আসা শুরু করে আপেল। আপেল এখানে এসে পূর্বের মত বসবাস করা শুরু করলেও তার মামী আর আগের মত নেই।
২ সন্তানের জননী মামী সন্তানদের কথা চিন্তা করে নিজেকে সুধরে নেয়। এদিকে ভাগ্নে আপেল তার গিটারে সুর তুলতে মামীকে আবারও অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। এতে মামী রাজি না হয়ে বিষয়টি স্বামী সাইদুর রহমানকে জানিয়ে দেয়। আলেয়া অনৈতিক প্রস্তাবের কথা তার স্বামীকে বলে দেয়। তখন থেকেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আপেল। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে তার সঙ্গে মামী আলেয়া বেগমের বিরোধ চলছিল। এঘটনায় এলাকাবাসী ও নিহত আলেয়ার বড় সতিন রূপিয়া বেগম (৪০) আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে আপেল তার মামীকে কাছে ডাকছিল। মামী তাতে সাড়া না দিলে দু’জন বিবাদমান কাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর কিছুক্ষণ পরে মামী আলেয়া বেগম বাড়ির পাশে টিউবওয়েলের পানিতে কাঁপড় ধুতে যায়। আপেল কৌশলে তার কাছে থাকা কাঠ কাটার ধারালো বাটাল দিয়ে মামী আলেয়া বেগমের শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে আঘাত করে। এতে তার কান, ঘাড়, বুক ও পেট কেটে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে আপেল মিয়া ঘটনার বেগতিক দেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এক সময় বাড়ির পাশের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে গিয়ে সেই ধারালো বাটাল দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করে। এতে তার ভুড়ি বেড় হয়ে ঘটনাস্থলে তারও মৃত্যু হয়। মামী ভাগ্নে নিহতের খবর পেয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’জনের লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, পরকিয়া নয়, পারিবারিক কলহের দন্দ্বে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।