প্রথম দিনটি বাংলাদেশকে হাতাশা উপহার দিল আফগান ব্যাটসম্যানরা
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: মহিন উদ্দিন মিয়াজি
একরাশ হতাশা নিয়ে প্রথম দিন শেষে মাঠ ছাড়ছে বাংলাদেশ দল।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের বানিয়ে নিয়েছে আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে রহমত শাহ’র
ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি পথে রয়েছেন আগের দুই টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেয়া আসগর আফগান। দিন শেষে তিনি অপরাজিত আছেন ৮৮ রানে। ১৬০ বলে ৩ চার আর ২ ছয়ে তার ইনিংসটি সাজানো ছিল। শেষ বিকেলে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন আফসার জাজাই। তিনি অপরাজিত আছেন ৩৫ রানে। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এ’দুজন এরই মধ্যে যোগ করেছেন ৭৪ রান। আফগানিস্তানের ব্যাটিং দেখে চোখে ভ্রম জাগে এটি তাদের মাত্র তৃতীয় টেস্ট কিনা! বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের বল চয়েজ, মাথা ঠান্ডা রেখে বলের গুণাগুণ বিচার করে খেলা সবই দেখলে মনে হবে তারা টেস্ট ক্রিকেটে অনেক অভিজ্ঞ। তাতে করে প্রথম দিন শেষে আফগানদের বোর্ডে ঝকঝক করছে ২৭১ রান।
বিষয়টি অনুমিতই ছিল। সাগরিকার স্পিন স্বর্গে সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে সর্বোচ্চ একজন পেসার নিয়ে নামবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আবার নাও থাকতে পারে। অবশেষে পরের অনুমানই সত্যি হলো। গেল বছরের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দ্বিতীয় টেস্টের অনুরূপ এই টেস্টেও কোনো পেস বোলার রাখা হয়নি একাদশে। বোঝাই যাচ্ছে স্পিন সর্বস্ব বাংলাদেশ। স্পিনার হিসেবে বল করেছেন সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন, মুমিনুল হক এবং নাঈম হাসান।
আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান টস জিতে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। দেশটির হয়ে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন রহমত শাহ। ফিফটির দেখা পান আসগর আফগান। স্বাগতিকদের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিয়েছেন একটি উইকেট। পার্টটাইম মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকার করেছেন মাত্র ৪ ওভার। দিনের শেষ ওভারটি করেন মোসাদ্দেক। মাহমুদউল্লাহ করেছেন ৪ ওভার, নিজের প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়ার পর দিনের শেষ সময়ে করেছেন আরও তিন ওভার।
সাকিবের মলিন চেহারা বলে দিচ্ছে প্রথম দিনটি বাংলাদেশের কতটুকু হতাশায় কেটেছে।
টস হেরে একমাত্র টেস্টে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। আফগানদের হয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট করতে নামেন ইব্রাহিম জাদরান এবং ইহসানুল্লাহ। তাইজুল ইসলাম আফগানদের দলীয় ৪৮ রানেই দুই ওপেনারকে বিদায় করেন। লাঞ্চের আগে তাইজুল ইসলামের জোড়া আঘাতের পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও তুলে নেন এক উইকেট। ইনিংসের ৩৩তম ওভারের ৪র্থ বলে হাসমতুল্লাহ শহিদীকে আউট করেন রিয়াদ।
আফগানদের বিপক্ষে নিজের সপ্তম ওভারে ইহসানুল্লাহকে (৯) বোল্ড করেন তাইজুল ইসলাম। আর এতেই তাইজুল বনে যান বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সব থেকে দ্রুততম এবং তৃতীয় ১০০ উইকেট শিকারি বোলার। স্কোর বোর্ডে আফগানদের রান তখন মাত্র ১৯। এরপর আফগানদের দলীয় ৪৮ রানে আর এক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানের উইকেটও তুলে নেন তাইজুল। জাদরান তখন ২১ রান করে মাহমুদুল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। আর লাঞ্চের ঠিক আগ মুহূর্তে হাসমতুল্লাহ শহিদীকে ১৪ রানে আউট করেন রিয়াদ। ওভারের চতুর্থ বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান এই আফগান ব্যাটসম্যান।
এরপর ১২০ রানের জুটি গড়েন রহমত শাহ এবং আসগর আফগান। দ্বিতীয় সেশনের একটু পরই নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন রহমত শাহ। ইনিংসের ৭০তম ওভারে নাঈম হাসান বোলিংয়ে এসে ফিরিয়ে দেন রহমত শাহ এবং মোহাম্মদ নবীকে। রহমত শাহ আফগানদের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরির পর ১৮৭ বলে ১০টি চার আর দুটি ছক্কায় হাঁকিয়ে করেন ১০২ রান। মোহাম্মদ নবী কোনো রান করতে পারেননি।
আরো পড়ুন: