নোয়াখালীতে আবারো গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার
নোয়াখালী ব্যুরোঃ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চরবাটা ইউনিয়নে আমেনা বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে চরজব্বার থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকে যৌতুক দেওয়া সিএনজি নিয়ে পলাতক রয়েছে নিহতের স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পুলিশ গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করলেও নিহতের তিন বছরের শিশু কন্যা মেঘলা বলছে তার বাবা শেখ ফরিদ তার মা আমেনাকে মেরেছে (মারধর করা)। এর বেশি কিছু বলতে পারছে না সে।
মঙ্গলবার(৭ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পশ্চিম চরমজিদ গ্রামের লিটনের বাড়ি থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আমেনা বেগম দক্ষিণ চরমজিদ গ্রামের রবিউল হকের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকালে আছরের নামাজ পর আমেনাকে রান্না ঘরে রান্না করতে দেখেছে বাড়ীর লোকজন। ৫টার দিকে তাদের ঘর থেকে মেয়ে মেঘলার কান্নার শব্দ শুনে বাড়ির লোকজন ভিতরে গিয়ে ঘরের আড়ীর সাথে গলায় দড়ি পেঁছানো অবস্থায় আমেনাকে দেখতে পায়।
নিহতের ভাই আবুল বাসার জানান, ২০১৫ সালে পশ্চিম চরমজিদ গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে শেখ ফরিদের সাথে আমেনার বিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ফরিদ যৌতুকের জন্য আমেনাকে মারধর করতো। পরে নিরুপায় হয়ে যৌতুকের টাকা বাবদ ফরিদকে একটি সিএনজি নিয়ে দেন তারা। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে টাকার জন্য পুন:রায় আমেনাকে মারধর করতে থাকে ফরিদ। বিষয়টি আমেনা তাদের জানিয়ে ছিলো।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিকালে আমেনা যখন রান্না করছিল তখন ফরিদ বাড়িতে আসে এবং রান্না ঘর থেকে বসত ঘরে নিয়ে আমেনাকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য আমেনার লাশ ঘরের আড়ীর সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায় ফরিদ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বসত ঘরের পাশেই আমেনার রান্না ঘর। পুলিশ যখন তার লাশ চুরতহাল করছে ঠিক তখনও আমেনার চুলায় তরকারী ও ভাতের পানি ফুটছে। পাশে একটি পাত্রে মুরগীর মাংসের টুকরা পড়ে আছে। খাটের এক পাশে কোরআন শরীফ পড়ে আছে ,যা সে নামাজ পড়ে তেলোয়াত করেছিল। তার ছোট মেয়েটি শুধু মা মা করে চিৎকার করছে। লাশের হাতে হলুদের গুড়া লেগে আছে। গলায় চিকন একটি প্লাাস্টিকের রশি এলোমেলো ভাবে পেছানো ও মাটি থেকে লাশের দূরত্ব ছিল না পা লাগানো ছিল। আমেনার মৃত্যুর ঘটনা স্থানীয়রা মেনে নিতে পারছে না। সকলের অভিযোগ তাকে হত্যা করা হয়েছে। এতে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো পড়ুন: