নীলাদ্রি —-
নিপা শিকদার
মাঝেমধ্যে এত্ত এত্ত রাগ হয় মন চায়
ঘর সংসার সব ফেলে দু চোখ যেদিকে যায় চোখ বাড়াই।
ভেবেছিলাম সারাটা বছর যেমন তেমন
পবিত্র রমজান মাসটা অনন্ত খোদা তোমায় হেদায়েত দান করবে।
তা আর হলো কই?
প্রতিদিনের মতো চলে রমজানেও
রাত তিনটা অব্দি জুয়ার মদের আখড়া
ঢুল-ঢুল চোখে গা হেলিয়ে দুলিয়ে
রাত সারে তিনটায় দরজার টুংটাং কলিং বেল,
দরজা খুলতেই আমার গায়ের উপর ছোট্ট শিশুর মতো ধপাস।
পারিনা কইতে পারিনা সইতে
ভোর চারটা হতে রাত দশটা অব্দি কেটে যায় মদের নেশা ঘুমে।
কোথায় খাওয়া কোথায় বাজার সাজার কোথায় কি?
এসব ভাবতে ভাবতে বোকার মতো
নীলাদ্রির মুখ পানে চেয়ে থাকি
এটা কি কোন মানুষের জীবন!
আমারও তো মন চায় স্বামী সোহাগী হতে..
কতো কথা কতো চাওয়া পাওয়া স্বপ্ন
বুকের ভিতর কবর দিয়ে যাই।
চোরের মতো নীলাদ্রির ঘুম চোখে আমি
হাত বাড়িয়ে চুম্বন একে দেই।
কি যে সুন্দর নীলাদ্রির নেশা ভরা মুখ !
মন চায় ওকে ঝাপটে জরিয়ে ধরি বলি
নীলাদ্রি আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।
তুমি ফিরে এসো নোংরা জগৎ হতে।
দেখবে আমাদের মতো সুখি আর কেউ নেই এ ভবের সংসারে।
নীলাদ্রির মায়াবী মুখখানা দেখলে
শত রাগ অভিমান কোথায় পালিয়ে যায় নিজেই জানিনা!
বছরের পর বছর নিজেকে নিজে সামাল দিতে থাকি নতুন ভাবনায়।
নীলাদ্রির নেই চিন্তা নেই ভাবনা ওহ কি সুন্দর নাক ডেকে ঘুম..
আর আমি তাকে কোন একদিন ভালো মানুষ রূপে দেখবো
সেই প্রত্যাশায় নিজে নিজে সুখের বীজ বপন করতে থাকি…
একটুখানি ঘুমে নড়াচড়া দিয়ে উঠলে
হঠাৎ আমায় বুকে জরিয়ে কাছে পেতে চায়..
আমার মনে পরমেশ্বর আনন্দ ঢেউ তুলে
পরক্ষনে ঠাস করে আবার হাতটা ছাড়িয়ে অন্যদিকে পাশ কাটে।
মনে খুব কষ্ট পাই কষ্ট পেলে তাতে নীলাদ্রি কি আসে যায়?
সে কখনো এসব বুঝার চেষ্টা করেনি।
তার সাথে রাগ করে কি করবো
এসব এখন আমার নিত্য সঙ্গী..
কতো ঘুমাবে সংসারে চাল ডাল প্রয়োজনীয় কতো কি না লাগে?
যাও বাজারে যাও…
সে তখন লাল লাল চোখে দাঁত কটমট করে জবাব দেয়
নেশাটের আবার সংসার?
যা তুই দূর হ দূরে যেয়ে মর..
নড়েচড়ে আবার ঘুম।
ঘুম ভাঙলে তাড়াহুড়ো করে গা গোসল সেরে
গায়ে শুভাশিত পারফিউম ফিটফাট জিন্স টাই লাগিয়ে
চলে যায় জুয়া মদের আসরে।
এভাবে দিন চলে…
এদিকে আমি অধরা নিরবে কেঁদে বুক ভাসাই
কতো ব্যথা কতো কথা বুকের মাঝে নীরবে অগ্নি জ্বলে তা কেবল খোদা-ই জানে।
আরো পড়ুন: