কুমিল্লায় পর্নগ্রাফি মামলায় ইউপি সদস্য কারাগারে; ভুক্তভোগীদের অভিযোগ চক্রান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক ;
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ৬নং বারেরা ইউনিয়নের দোবাড়িয়া এলাকার কিশোরী মাহমুদ আক্তারের পর্নগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় হাজতবাস করছেন ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ৮নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন।স্থানীয় এলাকাবাসী, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়,যে ঘটনাটির সুত্রধরে মামলাটি দায়ের করা হয় সে ঘটনার প্রায় ৬ মাস পর গত ৫ই মে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে হেয় করতে সাজানো মামলায় আসামী করা হয় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেন, রশিদ খাঁন, হারুন, কাশেম, মোস্তফা কামাল, মিজান ও ফয়েজ সহ ৭জন কে। মামলার ১নং আসামী করা হয় আনোয়ার হোসেন মেম্বারকে। আর এ মামলায় গত ২১মে রাতে চান্দিনা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে ২৩ মে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে আনোয়ার মেম্বার কে ঘটনাটি অবহিত করার পর বিষয়টি মিমাংসার জন্য ঘটনাস্থলে ডেকে নেন। আনোয়ার মেম্বার ও তার পরিবারের অভিযোগ বিরোধীদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা এবং স্থানীয় নির্বাচনে চেয়ারম্যানের বিরোধিতার কারনেই তাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এছাড়াও এ মামলার আসামী ভুক্তভোগী ৫নং আসামী মোস্তফা কামাল সহ অপর কয়েকজন আসামীদের বিষয়ে এজাহারের কোথাও কোন অভিযোগ এবং সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ না থাকলেও তাদেরকেও আসামী করা হয় রাজনৈতিক ও পূর্ব শত্রুতার জেরে।কারান্তরীন ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ৬নং বারেরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম গত ২৪ মে তাকে ফোন দিয়ে জানান কারাগারে তার স্বামী স্ট্রোক করেছেন। দ্রুত চিকিৎসার জন্য ৭০ হাজার টাকা প্রয়োজন এবং জেলারের নাম্বার উল্লেখ করে ০১৩০৫৪১২৫৩০ উক্ত নাম্বারটি দিয়ে জরুরী যোগাযোগ করার জন্য বলেন। আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী উক্ত নাম্বারে ফোন দিলে জেলার পরিচয় দিয়ে ৭০ হাজার টাকা দাবী করেন। কথা মত একই দিন দ্রুত স্বামীর চিকিৎসার জন্য বিকাশের ০১৮৭৪২৩৪০৯৭ ও ০১৯৪৫৭৮৪৪৮০ নাম্বারে ৭০ হাজার টাকা বিকাশ করেন। পরবর্তীতে নাম্বারগুলোতে ফোন দিলে সবগুলো নাম্বারই বন্ধ পাওয়া যায়। সন্দেহ হলে আনোয়ারের স্ত্রী কুমিল্লা জেলখানায় যান। সেখানে জেলার কে বিষয়টি জানালে নাম্বারগুলো তার নয় এবং এসব বিষয়ে কিছু জানেন না এবং বন্দীদের চিকিৎসা সরকারি ভাবেই করা হয় বলেও জানান। এছাড়া উক্ত নাম্বারগুলোর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ বিষয়ে দেন।তার স্বামী নির্দোষ দাবী করে আনোয়ার মেম্বারের স্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কারনে তার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রহসনর সাজানো মামলা থেকে স্বামীর জামিন ও অব্যাহতি কামনা করেন।এবিষয়ে মামলার বাদী মাহমুদা আক্তার বলেন, মামলায় উল্লেখিত সকল ঘটনা সত্য এবং সঠিক। তিনি আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীও জানান।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনার বিষয়ে সরাসরি সত্য বা মিথ্যা তেমন কিছু জানেন না তিনি। তবে লোকমুখে শুনেছেন ঘটনাটি। জেলখানায় অসুস্থ হওয়ার খবরটি তিনি তার ইউনিয়ন সচিব শাখাওয়াত হোসেনের কাছে শুনে আনোয়ার মেম্বারের স্ত্রী কে জানান। এবং জেলারের ফোন নাম্বারাটি তিনিই দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সহ মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। মামলার ১ নং আসামী কে গত ২১ মে আটক করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে করার চেষ্টা চলছে।