March 23, 2023, 8:22 pm

#
ব্রেকিং নিউজঃ
বুড়িচংয়ে সম্পত্তি বিরোধের জেরে ৫জনকে কুপিয়ে জখম; মামলা তুলে নিতে হুমকি।মহেশপুরে পুত্রের লাঠির আঘাতে পিতার মৃত্যু.জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হলেন সাদিয়া ইসলাম: নড়াইল সদর।কুমিল্লায় নব-গঠিত কৃষক দলের আহবায়ক কমিটির পরিচয় সভা অনুষ্ঠিত।বাউফলে ডাকাত চিহ্নিত, মালামাল উদ্ধার হলেও প্রকাশ্যে ডাকাতদের চলাফেরা।ইশ্বরগঞ্জে ঘুমন্ত মা কে কুপিয়ে হত্যা, ঘাতক ছেলে আটক।কুমিল্লা মহানগর জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহবায়ক কমিটি গঠন।কুমিল্লায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে সময়ের আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন।কুমিল্লা আর্দশ সদর উপজেলার ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদায়ী শিক্ষার্থীদের দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।বরুড়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচন অফিস ভাঙচুর।

উপমহাদেশের মহিয়ষী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর ১১৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

উপমহাদেশের মহিয়ষী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর ১১৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সেলিম চৌধুরী হীরা,
লাকসাম উপমহাদেশের মহিয়ষী নারী প্রথম মহিলা নবাব, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর আজ ১১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। জানা যায়, ১৮৩৪ সালে কুমিল্লা জেলার তৎকালীন হোমনাবাদ পরগনা লাকসামের খরস্রোতা ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেষে পশ্চিমগাঁও গ্রামে অবস্থানকারী মোতাহের খানের পুত্র সুলতান খাঁন ওরফে গোরাগাজি চৌধুরীর পুত্র হোসেন আলী চৌধুরী গাজী শাহেদার অন্যতম বংশধর মুজাফফর গাজির কন্যা মায়মুনা বিবি ওরফে ময়না বিবিকে বিবাহের পর তাদের দুই পুত্র আশ্রাফ আলী চৌধুরী ও আহম্মদ আলী চৌধুরী আর দুই কন্যা আফিয়া চৌধুরানী ও অমেনা চৌধুরানী আহম্মদ আলী চৌধুরী হলেন নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর পিতা। তার মাতৃকুল নোয়াখালী জেলার প্রাচীন নাম ভুলুয়ার অন্তর্গত ধলীয়া গ্রামে মিনা মাহতাব নামে এক সভ্রান্ত বংশীয় জনদরদি জমিদারের পুত্র ফজিল আহম্মদ চৌধুরীর শেষ বংশধর বেজু মিয়া চৌধুরী। এরই ভগ্নিপতি জমিদার আমজাদ চৌধুরী ওরফে ডেঙ্গুমিয়া চৌধুরীর পুত্র আসাদ চৌধুরীর প্রথমা কন্যা আরফান্নেছা চৌধুরী। তৎকালীন হোমনাবাদের জমিদার আহম্মদ আলী চৌধুরী ও ভুলুয়ার জমিদার আসাদ চৌধুরী কন্যা আরফান্নেছা চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ কন্যা হলেন এ মহিয়ষী নারী ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী। স্থানীয় সূত্র জানায়, মোগল সম্রাট শাহআলমের শাসনকালে শাহজাদা জাহান্দর খানের পুত্র হুমায়ন খাঁ হোমনাবাদ পরগনার জমিদারি লাভ করার পর ৬ষ্ঠ বংশধর আহম্মদ আলী চৌধুরীর পিতা জমিদার নন্দিনী আরফান্নেছা মাতার তৃতীয় সন্তান এ ফয়জুন্নেছা। বড় দুই ভাই ইয়াকুব আলী চৌধুরী ও ইউছুফ আলী চৌধুরী এবং ছোট বোন লতিফান্নেছা চৌধুরী রানী। ফয়জুন্নেছার মাতা ও জমিদার নন্দিনী এবং জমিদার পতিœ ছিলেন বলে ফয়জুন্নেছা সকলের আদুরে কন্যা হলে যা হয় তার ব্যাতিক্রম ছিলেন না। প্রাচুর্যেই জন্মে ছিলেন জমিদার তনয়া ফয়জুন্নেছা। বাল্যকালেই ১৮৪৪ খ্রিঃ সেপ্টেম্বর মাসে আকালেই তিনি পিতৃহারা হলেন। তখন তিনি ১০ বছরের বালিকা মাত্র। ইয়েমেনের অধিবাসী বিখ্যাত ব্যাক্তি হোমনাবাদ পরগনার আদী মুসলমান জমিদার সাধুবর গাজী শাহেদা। বংশধরদের মধ্যে এক বংশের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী অপর বংশধর বরুড়া উপজেলার বাউকসারের জমিদার মোহাম্মদ গাজী চৌধুরী। কিশোরী ফয়জুন্নেছার বিয়ের প্রস্তাব আসে দুঃসর্ম্পকীয় আত্মীয় ওই জমিদার গাজী চৌধুরীর সাথে। অনেক নাটকীয় ও কৌশলী শর্তের বেড়াজালে অবশেষে ফয়জুন্নেছার বিয়ে সম্পন্ন হলো জমিদার গাজী চৌধুরীর সাথে। চলে গেলেন স্বামীর বাড়ি বরুড়া উপজেলার বাউকশার গ্রামে। শর্তানুযায়ী গাজী চৌধূরী ও ফয়জুন্নেছার জীবন সুখে চলছিল। এরমধ্যে দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নিল আরশাদুন্নেছা ও বদরুন্নেছা। কিছুদিন পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শর্ত ভঙ্গ শুরু হলে বড় মেয়ে আরশাদুন্নেছাকে ওই বাড়ীতে রেখে ছোট মেয়ে বদরুন্নেছাকে সঙ্গে নিয়ে লাকসামের পশ্চিমগাঁও চলে আসে মায়ের কাছে। ১৮৮৫ সালে মায়ের মৃত্যুর পর ফয়জুন্নেছা জমিদারীর দায়িত্ব তুলে নিয়ে কর্মতৎপরতার মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলেন একজন সুদক্ষ, প্রজাহিতৈষী, শিক্ষানুরাগী, তেজস্বী ও বিচক্ষণ শাসক হিসাবে।
সূত্র আরো জানায়, জমিদার ফয়জুন্নেছার সমগ্রজীবন ছিল নিয়মতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলার মধ্যে। জমিদারী পরিচালনা ছাড়াও তাঁর দুটি প্রধান সাধনা ছিল আল্লাহর ইবাদত এবং সাহিত্য সাধনা। নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর জমিদারীর ১৪টি মৌজা ছাড়াও দেশে-বিদেশে ১৪টি প্রাথমিক মক্তব, প্রাথমিক বিদ্যালয়, দ্বীনিয়াত শিক্ষা, হাইস্কুল, বালিকা বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, দাতব্য চিকিৎসালয়, হাসপাতাল, দিঘী-পুকুর, মসজিদ, মুসাফিরখানা, পুল-ব্রিজ, পত্র-পত্রিকায় পৃষ্ঠপোষকতা, কবি সাহিত্যিকদের সাথে যোগাযোগ, ফয়জুন পাঠাগার, রূপজালাল গ্রন্থ রচনাসহ বিভিন্ন জনহিতকর কাজ করে গেছেন তিনি। এছাড়া ১৮৯৪-৯৫ সালে মক্কাশরিফে হজ্বব্রত পালন করতে গিয়ে ওই দেশের বাদশা আব্বাসিয় খলিফা হারুনুরু রশিদের স্ত্রী নামে যোবায়দা নহর পুনঃখনন এবং একটি মুসাফিরখানা রোবাত স্থাপন করেন। তৎকালীন ত্রিপুরার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ ডগলাস জনকল্যানমুখি কাজে অর্থ যোগানের জন্য দেশের সকল জমিদারদের কাছে চিঠি পাঠান। বিশাল পরিমান অর্থ যোগানের কথা ভেবে ওই জনকল্যানমুখী কাজে দেশের অন্যান্য জমিদাররা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শেষ মূহর্তে হোমনাবাদ পরগনার জমিদার ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী নিজেই ঋণ হিসাবে নয় জনকল্যানে সম্পূর্ন টাকা তিনি দান করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তৎকালীন ভিক্টোরিয়া মহারানী বিশ্বের একজন মুসলিম নারী জমিদারের এরূপে আচরণে মুদ্ধ হয়ে রানী ফয়জুন্নেছাকে বেগম উপাধিতে ভূষিত করলে তিনি সম্মানের সাথে প্রত্যাখান করেন। মহিলা জমিদার হিসাবে এমনিতেই তিনি বেগম বলে পরিচিত। রানী ভিক্টোরিয়ার রাজ দরবারে পুনরায় পরামর্শ করে ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীকে নবাব উপাধিকে ভুষিত করার সিদ্ধান্ত নেন যা ১৮৮৯ খ্রিঃ সেই খেতাব প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বর্তমান কুমিল্লার চর্থাস্থ সৈয়দ বাড়ীর মাঠে। তার জমিদারীর শাসনামলে হাসি কান্না দুঃখ বেদনায় ভরপুর তার সার্বিক জীবনে কাহিনী নিয়ে রূপক কাব্যগ্রন্থ রূপজালাল বইটি ১৮৭৬ খ্রিঃ প্রকাশ করার পর অবশেষে ১৯০৩ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর এ মহিয়ষী প্রথম রানী নবাব ফয়জুন্নেছা চির নিদ্রায় শায়িত হন তারই নির্মিত নবাব বাড়ি জামে মসজিদের পাশে।

#

     আরো পড়ুন:

পুরাতন খবরঃ

শুক্র শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১